সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

ক্যান্সারে আক্রান্ত সেই শিশু আয়ান ও তার পরিবার কে ভিটাবাড়ি থেকে উচ্ছেদ সম্পদ-সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার পায়তারা

 

ক্যান্সারে আক্রান্ত সেই শিশু আয়ান ও তার পরিবার কে এবার ভিটাবাড়ি থেকে উচ্ছেদ এবং সম্পদ-সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে । আদালতের কোন আদেশ বা নিষেধাজ্ঞা ছাড়ায় আয়ানের স্বজনরা তার গ্রামের ভিটাবাড়িতে অবৈধভাবে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। এখানেই শেষ নয় উচ্ছেদ চেষ্টা পাশাপাশি অব্যহত হুমকির মুখে পড়েছে শিশু আয়ানের বাবা, মা সহ পুরো পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে আয়ানের চিকিৎসাও বন্ধ হয়ে গেছে, দেখা দিয়েছে অর্থাভাব । ঝিনাইদহের শৈলকুপা প্রেসক্লাবে শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করছে আয়ানের পরিবার।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে আয়ানের বাবা অভিযোগ করে বলছেন, ‘‘আমি রিয়াজুজ্জামান আদর ( পিতা-মীর সামছুজ্জামান পান্না, সাং-মধ্যপাড়া,থানা-শৈলকুপা, জেলা-ঝিনাইদহ) শিশু ক্যান্সার রোগী হতভাগা আয়ানের পিতা । আপনারা অবগত আছেন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে আয়ান ২০১৬ সাল থেকে গণমাধ্যম সহ সবার সহযোগীতায় চিকিৎসাধীন আছে। সে চিকিৎসা নেয় কলকাতার ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালে ।
বর্তমানে আয়ানের শেষ আশ্রয়টুকু কেড়ে নিচ্ছে রক্তের আত্মীয়-স্বজন। ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় এলাকায় নামধারী ক্যাডার খ্যাত একজনের ছত্রছায়ায় আয়ানের বড় চাচা মীর আসাদুজ্জামান সেফার্ড ও মেঝো চাচা মীর তানজিলুর জামান শিপলু, আয়ানের দাদা( মীর সামছুজ্জামান পান্না) কে দিয়ে বসতভিটার জমাজমিতে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তারা বিজ্ঞ আদালতের কোন নেটিশ ছাড়ায় বসতভিটার উপর জোরপূর্বক নোটিশ/সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়েছে এবং আয়ানের আশ্রয়ের জমিটুকু কেড়ে নেয়া ও উচ্ছেদের পায়তারা করছে। এছাড়া অব্যহতভাবে হুমকি দিচ্ছে ভরন-পোষণ মামলা দিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী কে গ্রেফতার করাবে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা উচ্ছেদের আশংকা ও নিরাপত্তাহীনতায়ও ভ’গছি’’।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আয়ানের বাবা প্রতিবন্ধী রিয়াজুজ্জামান আদর আরো অভিযোগ করছেন, ‘‘বিজ্ঞ আদালতের আদেশ ছাড়া কিভাবে আমাদের বসতভিটার উপর নোটিশ টাঙ্গিয়েছে আশা করি সেটি খতিয়ে দেখবেন এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। এব্যাপারে সবার সহযোগীতা ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি’’।
পরিবারটি সবার উদ্দেশ্যে আকুতি জানিয়ে বলছেন, ‘‘আমাদের ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু সন্তান আয়ান সহ পরিবারের শেষ আশ্রয়টুকু যেন কেউ কেঁড়ে নিতে না পারে এবং আয়ানের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারি সে প্রার্থনা করছি। বরাবরের মতো গণমাধ্যমের সহযোগীতা যেন পায় সেই প্রত্যাশা করছি এবং দোয়া প্রার্থনা করছি’’। সংবাদ সম্মেলনে শিশু আবিত হাসান আয়ান, তার বাবা রিয়াজুজ্জামান আদার ও মা ফাল্গুনী জামান উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, আবিত হাসান আয়ান ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার মধ্যপাড়া গ্রামের রিয়াজুজ্জামান আদরের পুত্র। বাবার ব্যবসায়িক সূত্রে পরিবারটি যশোরে বসবাস করত। ২০১৬ সালে আয়ানের বয়স যখন ৪বছর তখন তার শরীরে বাসা বাঁধে জটিল রোগ, ধরা পড়ে হেপাটাইটিস সি ও টনিক আইটিপি। তাঁর শরীরের রক্ত জমাট বেঁধে যায়। ঢাকা ও কলকাতার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান ব্যয়বহুল চিকিৎসার কথা। অর্থাভাবে যখন শিশুটি মরতে বসে তখন খোঁজ পেয়ে যশোর থেকে একযোগে আঞ্চলিক, জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন সহ গণমাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দানশীল মানুষের আশাতীত সাড়া মেলে, টানা ৪বছর তাতে চলে চিকিৎসা। তবে বর্তমানে আর্থিক সংকট সহ পারিবারিক বসতভিটা আর জমাজমি নিয়ে স্বজনদের সাথে বিবাদে পড়ে থমকে গেছে চিকিৎসা। ফের মৃত্যুর মুখে শিশু আয়ান এবং বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হুমকির মুখে পড়েছে পরিবারটি।

এই বিভাগের আরও খবর
Loading...