‘আমার ছেলে তো কোন অন্যায় করেনি’

টিটিই শফিকুলের কর্মে গর্বিত পরিবার, বাবা-মা’র বসবাস ভাঙ্গা মাটিরঘরে

 

মাটির ঘর ছাড়া মাঠে নেই কোন জমা-জমি । নুন আনতে পানতা ফুরাই। এই হলো রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলামের ৩স্বজন কে জরিমানা করে বরখাস্ত ভ্রাম্যামান টিকিট পরিদর্শক(টিটিই) শফিকুল ইসলামের বাড়ি। এলাকাতে ছোট বড় সবার কাছে শফিকুল শফিক স্যার হিসাবে পরিচিত। তিনি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া গ্রামের রজব আলী বিশ^াসের ছেলে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রোষানলে পড়ে সাময়ীক বরখাস্ত হলেও শফিকুলের কর্মে গর্বিত বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা ।

বাড়ির জমি মাত্র ১০ শতক, আর কোন উপায় না থাকায় পরের জমিতে কামলার কাজ করে সংসার চালান শফিকুলের পিতা। ছেলে কে পড়ালেখা করার কোন সামর্থ চিল না। তাই ছোট বেলা থেকে টিউশনি করছে শফিকুল। ২ভাই ১ বোনের ভেতরে সে বড়। ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ে চান্স পেলেও ভর্তির টাকা জোটেনি কিন্তু হাল ছাড়েনি। দিনে রাতে ৪টি ব্যাচে প্রাইভেট পড়িয়ে আইনের এই ছাত্র চালিয়েছে নিজের পড়ালেখা। অনার্সে পড়া অবস্থায় প্রায় ৯ বছর আগে চাকুরী পায় বাংলাদেশ রেলওয়েতে। এ অবস্থায় অবস্থায় মাস্টার্সও কমপ্লিট করে। চাকুরী থেকে বরখাস্তের খবরে শফিক তার শ্যালক রমিজ হোসেন কে জানায় ‘সৎভাবে বাঁচতে গেলে এ অবস্থায় হয়’।

প্রতি মাসে সরকারী কোষাগাারে সর্বোচ্চ টাকাজমা দেওয়ার কারণে সহকর্মীদের কেউ কেউ তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছিল বলে জানান তার শ্যালক ।

চাকুরী থেকে শফিকুলের বরখান্তের খবরে বিষ্মিত শফিকুলের চাচা লুৎফর রহমান। শফিকুলের প্রতিবেশী মনিরুল ইসলাম বলছেন অনিয়ম-দুর্ণীতি করলে শফিকুলের মাটির ঘর থাকতো না ।

ভ্রাম্যমান টিকিট পরিদর্শক(টিটিই) শফিকুল ইসলামের বাবা রজব বিশ^াস ঘটনার ১দিন পরে বিষয়টি জানতে পারেন। গ্রামের এই সহজ-সরল মানুষটি মোবাইলও চালাতে পারেনা, তাই ছেলে কে আর ফোন করেনি, বুঝতে পারেনি কি হয়েছে তার ছেলের, শুধু বলছিলেন ‘.. আমার ছেলে তো কোন অন্যায় করেনি, সে অসৎ না, তার চাকুরী যেতে পারে না’

এই বিভাগের আরও খবর
Loading...