স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে খেলোয়াড় হবে। মুখ উজ্জল করবে মা-বাবা, গ্রাম ও দেশের। ফুটবলকে ভালোবেসে তাই ছোটকাল থেকেই খেলার প্রতি আগ্রহ ছিলো তার। স্কুল থেকে কোন খেলার আয়োজন করলে তাতে অংশ নিতো সে। উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে দলের হয়ে খেলা করতো আফরিনা। সেই খেলায় যেন কাল হলো তার। খেলতে গিয়ে পায়ের আঘাত পায় সে। সেই আঘাত এখন পরিণত হয়ে মরণব্যাধী কান্সারে।
সেই ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে সহায়-সম্বল বিক্রি করেও চিকিৎসা করতে পারছে না হতদরিদ্র পিতা আব্দুল আজিজ। আফরিনার বাড়ী ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কাঁচেরকোল ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে।
জানা যায়, ২০১৫ সালে বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণীতে অধ্যায়ণরত অবস্থায় বেণীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতে যায়। ক্যাপ্টেনের দ্বায়িত্ব থাকা অবস্থায় ফুটবল খেলতে গিয়ে বা পায়ে আঘাত পায় আফরিনা। সেসময় কিছু বুছতে না পারলেও কয়েক বছর পর সেখানে শুরু হয় ব্যাথা। দিনে দিনে সেখানে ফুলতে শুরু করে। কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাথাটা ফুলে এখন ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে।
আফরিনার পিতা আব্দুল আজিজ জানান, ‘তার মেয়ে বোয়ালিয়া স্কুল থেকে এ প্লাস নিয়ে ফাইভ পাশ করে। কোনদিন এক ছাড়া দুই রোল হয়নি তার। মেয়ের স্বপ্ন ছিল শিক্ষিত হবে। খেলোয়াড় হবে দেশের মুখ উজ্জল করবে। কিন্তু কি হয়ে গেল মেয়ের। ব্যাথার জ¦ালায় দিন রাত-কান্না কাটি করে। তিনি বলেন, কিছু করতি পারিনে, যা টাকা পয়সা ছিল তা তো শেষ হয়ে গেছে। মেয়েটাকে এখন চিকিৎসা করাতে ৩/৪ লাখ টাকা দরকার। এত টাকা কোথায় মিলবে । সরকার আর সমাজের বৃত্তবানেরা যদি একটু সহযোগীতা করতো আমার মেয়েটা বাঁচবে ।
বর্তমানে রাজধানীর মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আফরিনা খাতুন স্বজনদের জানিয়েছে, তার আর কষ্ট সহ্য হয়না বাঁচার আকুতি জানিয়ে বলছে ব্যাথা সইতে পারছেন না। তার আব্বা সারারাত ধরে জেগে থাকে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উত্তর মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শৈলকুপা রক্তাদাতা সংঘের পরামর্শক ও এ্যাডমিন মোক্তাদির রুমী বলেন, তাদের সংগঠনের সদস্যরা মেয়েটির চিকিৎসার জন্য মানুষের কাছে যাচ্ছে। তারা নিজেরাও কিছু সাহায্য করছে। মেয়েটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখন কিছু রিপোর্ট এলে তার ভর্তির ব্যাপারে ডাক্তার পরামর্শ দিবেন। মেয়েটির বাবা খুবই অসহায়। সমাজের বিত্তবানরা যদি একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তবে মেয়েটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে।
আফরিনাকে সহযোগিতা করতে চাইলে (০১৩০৮ ৩৪৬৫০১ (বিকাশ + নগদ) নম্বরে সহযোগিতা পাঠানো যাবে।
এদিকে আফরিনার জন্যে সাহায্য ও সহযোগীতার আবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পৌছেছে বলে শৈলকুপার রক্তদাতা সংঘ ও স্বজনরা জানিয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সহ সকলের প্রতি ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। জাতীয় মহিলা ক্রীড়া পরিষদের সম্পাদক মাহফুজা আক্তার কিরন কে তিনি আফরিনার বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে দায়িত্ব দিয়েছেন।
[ সংবাদ ও তথ্য সংগৃহীত]
