বোতলের তেল ভেঙে’ দোকানিরা খোলা তেল হিসেবে দ্বিগুনদামে মেপে বিক্রি করছে

বোতলজাত সয়াবিন তেল হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে শৈলকুপার হাট-বাজার থেকে।
বাড়তি মুনাফার জন্য বোতলজাত তেল খুলে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। শৈলকুপার বড় বড় মহাজন, ডিলার আর ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেল বাজার থেকে ‘একেবারে উধাও’ হয়ে গেছে বলে দোকানিদের ভাষ্য। তারা বলছেন, খোলা তেল কিছু কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি।
তাদের অভিযোগ, আসলে সেসব খোলা তেল নয়, বোতল থেকে খুলে খোলা তেল হিসেবে বিক্রি করছেন; যা লিটারে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায়।
খোলা তেলের দাম বেশি হওয়ায় ‘বোতলের তেল ভেঙে’ দোকানিরা খোলা তেল হিসেবে মেপে বিক্রি করছেন।
সয়াবিন তেল নিয়ে এমন কারসাজিতে সাধারণ মানুষের মাঝে শুরু হয়েছে হাহাকার। তেল কিনতে না পেরে খালি হাতে বাড়ি ফিরছে অনেকে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ,শৈলকুপার কবিরপুরে রয়েছে এক ডজনের বেশী মহাজন। তাদের গুদাম ভর্তি ব্যারেল ব্যারেল তেল রয়েছে। শংকর কুন্ডু, রাজু কুন্ডু, মন্টু সাহা, মাসুম সাহা সহ ভোজ্য তেলের বড় বড় মহাজন রয়েছে।
খোলাবাজারে এসব তেল খুঁচরা ব্যবসায়ীরা যে যেমন দামে বিক্রি করে চলেছে। এদিকে সয়াবিনের নামে এখন সবচেয়ে বেশী পাম আর সুপার চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিনের সাথে পাম আর সুপার মিশিয়ে চলছে ভেজাল তেল বিক্রির মহোৎসব । কোনটা পাম আর কোনটা সুপার আর কোনটা সয়াবিন তা কোথাও উল্লেখ বা লেভেল নেই। আর এই সুযোগে প্রতারণার শিকার হচ্ছে ক্রেতারা।
এদিকে অনুসন্ধানে মিলছে সয়াবিন কারসাজির আরো বড় চক্রের সন্ধান। শৈলকুপা উপজেলাতে দেশের বড় বড় কোম্পানীর রুপচাঁদা, তীর, বসুন্ধরা, ফ্রেস সহ অন্যান্য কোম্পানীর বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়ে আসছে। তবে এসব কোম্পানীর ডিলারদের হাতে বোতলজাত ২লিটার, ৫লিটার এর কোন তেল নেই ।
শৈলকুপার গাড়াগঞ্জে সরকার ট্রেডার্সের সঞ্জয় সরকার রুপচাঁদা সয়াবিনের ডিলার, মো: সেলিম ফ্রেশ সয়াবিনের ডিলার, শেখপাড়ার আব্দুল হামিদ তীর সয়াবিনের ডিলার, শৈলকুপা শহরে রয়েছে বসুন্ধরার ডিলার বিপ্লব সাহা । রয়েছে আরো বিভিন্ন কোম্পানীর সয়াবিন তেলের ডিলার ।
হঠাৎ কেন হাওয়া হলো এসব কোম্পানীর বোতলজাত তেল ? শৈলকুপার গাড়াগঞ্জ সহ উপজেলা শহরের ডিলারদের বিভিন্ন গুদাম আর ঘর ঘুরে দেখা গেছে তাদের হাতে আসা কোন বোতলজাত তেল নেই তবে ব্যারেল ব্যারেল খোলা সয়াবিন তেল রয়েছে। অনেকের অভিযোগ তেলের দাম বাড়ার কারণে অনেক ডিলার বোতলজাত তেল কেটে ব্যারেল আর ড্রাম ভর্তি করে রেখেছে।
একই কাজ করে চলেছে বড় বড় ব্যবসায়ীরা। তারা ডিলারদের কাছ থেকে বোতলজাত তেল নিয়ে তা কেটে ড্রাম ভর্তি করে খোলা তেল হিসাবে মেপে মেপে কেজি প্রতি ইচ্ছামতো দাম হাকিয়ে বিক্রি করছে ।
তবে এসব রোধে শৈলকুপায় নেই ভ্রাম্যমান আদালতের কোন অভিযান-জরিমানা । উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক কারণে রয়েছে নির্বিকার। সরকারী নির্দেশ-আদেশ মানছেন না এসব সরকারী কর্মকর্তারা, দেখেও না দেখার ভান করছে ফলে যে কোন সময় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ছড়াতে পারে বিক্ষোভ আকারে ।
এই বিভাগের আরও খবর
Loading...