৩০ টাকার তরমুজ যখন ৩’শ টাকা, জানেন কি তরমুজের আসল দাম কত ?

 

প্রচন্ড গরম আর রমজানে বাজারে এক একটি রসালো ফল তরমুজ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২’শ থেকে ৫’শ টাকা দরে। অর্থাৎ ছোট আর মাঝারি সাইজের তরমুজ ২’শ, আড়াই শো আর বড় সাইজের এক একটি তরমুজ ৩’শ,৪’শ বা ৫’শ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে ।

কিন্তু মাঠ থেকে ওঠানোর পর এসব তরমুজ কত করে বিক্রি হয়েছে জানেন কি ?

আসুন আমরা জানার চেষ্টা করি, পোস্ট মর্টেম করার চেষ্টা করি তরমুজের আসল দাম কত?

পাইকারি মোকাম থেকে ‘শ মূলে’( ১’শ পিচ) খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি পিস তরমুজ কত দাম দিয়ে কিনে থাকেন। এই তথ্য পাবলিকের কাছে জানা খুব একটা সহজ নয়। তবে তরমুজের বাজারে ভ্রাম্যমান আদালত চালানোর সময় ( ঝিনাইদহের শৈলকুপায়) আমরা জেনেছি সেই দাম, মূল্য তালিকা বা রশিদ বা ফর্দ থেকে।

দেখুন এখানে বরিশালের পোর্ট রোডের কাঁচা-পাকা মালের আড়ৎ এর একটি ফর্দ রয়েছে, তরমুজ বিক্রির । রশিদে লাল বৃত্তে খেয়াল করুন সেখানে প্রতি পিস তরমুজের দাম লেখা আছে ৪২ টাকা ও ৩০ টাকা। এরপর অন্যান্য যাবতীয় খরচ ধরে মোট খরচের তালিকাও আছে। সরকারী নিয়মে আছে কৃষি পণ্য ৫ থেকে ১০পার্সেন্ট লাভে বিক্রি করতে হবে। কিন্তু ভেবেছেন ৩০ বা ৪০ টাকার তরমুজ কত পার্সেন্ট লাভে বিক্রি করলে তার দাম ৩শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত হয় !

আমরা শুধু পাইকারি বাজার থেকে খুঁচরা পর্যায়ে বিক্রির একটি তথ্য দিয়েছি। তবে আরো তথ্য বাকী রয়েছে, জানেন কি কৃষকদের কাছ থেকে মানে মাঠ থেকে ফড়িয়ারা ‘খেত মূলে’ মানে খেত ধরে পাইকারি মোকামে কত করে বিক্রি করে তরমুজ?

যদি পাইকারি ব্যবসায়ীরা ৩০ বা ৪০ বা ৮০ টাকা দরে তরমুজ বিক্রি করে তাহলে ফড়িয়ারা মাঠ থেকে এর ( ৩০ বা ৪০ টাকার) চেয়েও কম দামে সাধের তরমুজ কিনে থাকে। সেটার মুল্য তালিকা না পেলেও অনুমান করা যায় ১০ থেকে ১৫ টাকা পিস হিসাবে তারা কৃষকদের কাছ থেকে খেত ধরে তরমুজ কিনে থাকেন!

আর আমরা যারা সাধারণ ক্রেতা হাট-বাজার থেকে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তরমুজ কিনে থাকি অর্থাৎ ভোক্তা পর্যায়ে তা কেজি বা পিস আকারে আরেক দফা লাভে বিক্রি করেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। ফলে তিন হাত ঘুরে এই তরমুজের দাম এলাকাভেদে ১০ গুণও বেড়ে যায়। এতে করে দাম দাড়ায় ৩’শ, ৪’শ বা ৫’শ টাকা পর্যন্ত ।
অর্থাৎ শুরু থেকে ১৫-২০ টাকা, তারপর ৩০ থেকে ৪০ বা ৫০ টাকা তারপর একলাফে ৩’শ থেকে ৫’শ টাকায় সাধের রসালো ফল তরমুজ কিনে খাচ্ছি আমরা ।

সব মিলিয়ে লাগামহীন দাম বাড়ায় মৌসুমী ফল তরমুজ এখন যেন বিলাসী খাদ্যদ্রব্য। রমজানে পুষ্টিবিদরা ইফতারে যতই ফল খাওয়ার পরামর্শ দিক না কেন, দামের কারণে তা খাওয়ার উপায় নেই সাধারণ মানুষের।

এই বিভাগের আরও খবর
Loading...